দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা সহজ ভাষায়

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনাঃআসসালামু আলাইকুম শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তোমাদের জন্য দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা সহজ ভাষায় উপস্থাপন করা হলো।

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা

তোমরা যারা দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনাটি খুঁজছিলে কিন্তু ভালো কোন রচনা খুজে পাচ্ছিলে না। তাদের জন্য সহজ এবং গুছানো ভাবে আমরা দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা নিয়ে এসেছি তাছাড়া তুমরা এই রচনাটি যেসব জায়গায় ব্যবহার করতে পারবে-দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা ক্লাস 10,দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা ক্লাস 9,দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা ক্লাস 12

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা কোটেশন,দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা পয়েন্ট,দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা ১০ পয়েন্ট। এই রচনাটি আপনি নিচের শিরোনাম ব্যবহার করেও লিখতে পারবেন।

  • দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান 
  • প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞান

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা 

ভুমিকা

মানুষ ও তার সভ্যতা আজ এক নতুন যুগে এসেছে। এই যুগকে আমরা বিজ্ঞানের যুগ নামে চিহ্নিত করতে পারি। মানুষের কল্যাণের জন্যে আধুনিক বিজ্ঞানের আবির্ভাব। মানুষ নিজের প্রয়োজনে বিজ্ঞানের নিত্যনতুন আবিষ্কার ঘটিয়ে চলেছে। প্রতিদিনের জীবনে আজ বিজ্ঞানই মানুষের একমাত্র ভরসা। মহাকাশ থেকে পাতাল- সর্বত্র বিজ্ঞানের অভিযান চলছে। 'বিজ্ঞান' শব্দের অর্থ হচ্ছে বিশেষ জ্ঞান। এ বিশেষ জ্ঞান মানুষের ব্যবহারে ও ভাবনায় এক যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটিয়েছে।

ঘরের কাজে বিজ্ঞান

বিজ্ঞান মানবজীবনকে সুস্থির করেছে, তাকে দিয়েছে সৌন্দর্য এবং শক্তি। বিজ্ঞান আজ মানুষের ঘরের মধ্যে। মানুষের ঘরে এবং বাইরে সর্বত্রই শোনা যায় বিজ্ঞানের পদধ্বনি। প্রতিদিন সকালে শয্যাত্যাগ থেকে রাতে শয্যাগ্রহণ পর্যন্ত বিজ্ঞান যেন জননী-স্নেহে মানুষকে বেঁধে রেখেছে। রেডিওর প্রভাতি ঘোষণা শুনে আমাদের ঘুম ভাঙে। বিজ্ঞান এনে দেয় কলের পানি, কখনো গরম কখনো ঠান্ডা, মাথার উপর ঘুরছে পাখা, রেকর্ড প্লেয়ার অথবা রেডিওতে বেজে চলেছে প্রিয় শিল্পীর কণ্ঠে গান।
 
কখনো আবার খেলার মাঠের ছবি ভেসে ওঠে টেলিভিশনের পর্দায়। বিজ্ঞানের কৃপায় ফ্রিজের মধ্যে অবস্থান করে একটা মিনি বাজার। মাছ মাংস থেকে শুরু করে শাকসবজি, রান্নার কাজে বিদ্যুতের বা গ্যাসের ব্যবহার আজ তো শহরের ঘরে ঘরে, কাগজের প্লাস্টিকের প্লেটে বিজ্ঞান অতিথিকে মিষ্টি দিচ্ছে। প্লাস্টিকের কাপে চা আর পলিপ্যাকে পরিবেশিত হচ্ছে রসগোল্লা ও রসমালাই। সুদূরের সংবাদ এনে দিচ্ছে সংবাদপত্র, সুদূরের বন্ধুর কণ্ঠ শোনা যাচ্ছে টেলিফোন ও মোবাইল ফোনে। কোনো খবর নেওয়ার জন্যে কারো বাড়িতে মিষ্টির বাক্স নিয়ে আর হানা দিতে হয় না।

বাইরের জীবনে বিজ্ঞান

ঘরের আসবাবপত্র, পরনের পোশাক ইত্যাদি পেয়েছে মানুষ বিজ্ঞানের আশীর্বাদে। রান্নাঘর, শোবার ঘর, বৈঠকখানা, গোসলখানা, পড়ার ঘর সবকিছুই বিজ্ঞান তার মনের মতো করে সাজিয়েছে। স্প্রিং দেওয়া খাট, গদি, শীতাতাপনিয়ন্ত্রিত যন্ত্র, আলমারি, চেয়ার কিছুই এ তালিকা থেকে বাদ পড়েনি। এর পরেও আছে নিত্য ব্যবহারযোগ্য বিলাসদ্রব্য, যা না হলে আমাদের চলে না। দাড়ি কামানোর ব্লেড থেকে শুরু করে মনমাতানো সেন্ট-সাবান সবই এসেছে বিজ্ঞানের বদৌলতে। ঘর সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে সেই আদিকালের মানুষের হাতে। সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে। 

তখন এ কাজে হাত দিয়েছে বিজ্ঞান ও কারিগরি বিদ্যা। ঘর ঝাঁট দিতে হবে না, রান্না করতে হবে না, কাপড় কাচতে হবে না, সবই করে দেবে যন্ত্র- এরকম একটি জীবনে আমরা এসে গেছি এবং আরো বেশি করে আসব। কিন্তু নিজের হাতে ঘরের কাজ করে যে আনন্দ, সে আনন্দ কী করে ঘরনিরা পাবেন। ভোগ্য আর বিলাস-পণ্যের পাশে বিজ্ঞানের দান- শিক্ষার উপকরণ কালি, কলম, কাগজ, পড়ার বই, পত্রিকা। স্বাস্থ্যরক্ষায় এসেছে ওষুধ।

কর্মময় জীবনে বিজ্ঞান

সংসার জীবনের বাইরে মানুষের কর্মময় জীবন। সেখানেও মানুষ বিজ্ঞানের আশীর্বাদে ধন্য। ঘরের বাইরে পা বাড়াতে না বাড়াতেই দুয়ারে হাজির হয় গাড়ি, সিএনজি, ট্যাক্সি, রিকশা, বাস, স্কুটার, সাইকেল ইত্যাদি। সুইচ টেপার সঙ্গে সঙ্গে ওপর থেকে নেমে আসে লিফট, চোখের নিমিষে দশ বিশতলা অফিসের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দেয় আমাদের। মাথার ওপর ঘোরে ফ্যান, চলে এসি। সেখানে টাইপরাইটারে চিঠি টাইপ করা, কম্পিউটারের সাহায্যে তৈরি হয় জটিল হিসাব। এরপর অফিসের শেষে আছে সিনেমা দেখার আনন্দ। এভাবে ঘরে-বাইরে সমান তালে বিজ্ঞান হয়ে উঠেছে মানুষের অনুগত সহচর। আসলে বিজ্ঞান মানুষের অন্তরঙ্গ সহচর হতে চায়। বিজ্ঞান মানুষকে ইতিবাচক বিশ্রাম ও আনন্দ দিতে চায়।

বিজ্ঞান ভাবনা

মানুষের মাথায় কাজ করে নতুন নতুন ভাবনা। বিজ্ঞানের কাজই হলো যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করা। যুক্তিগ্রাহ্য মনই চেতনার সঞ্চার করে। বিজ্ঞানের কল্যাণে মানুষ যেমন সুখী হতে চাইছে, তেমনি একদল স্বার্থপর মানুষ চাইছে কুসংস্কারের বিষ সমাজে ছড়িয়ে দিতে। সাপে দংশন করলে ওঝার পরিবর্তে হাসপাতালে যাওয়াই ভালো- এ সহজ যুক্তিটি একশ্রেণির মানুষ বুঝতে চাইছে না। প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞানের ভাবনা ব্যবহারে ও চিন্তায় উন্নততর জীবনের যুক্তিগ্রাহ্য স্বপ্ন দেখায়। সেখানে কুসংস্কারের কোনো স্থান নেই।

বিজ্ঞানের সমস্যা

বিজ্ঞান মানুষের দেহ-মনের সঙ্গে এমনভাবে জড়িয়ে আছে যে বিজ্ঞান ছাড়া আমরা এক মুহূর্তও টিকে থাকতে পারি না। উদাহরণ হিসেবে বিদ্যুৎসংকট, যানবাহন সমস্যা, ভোগ্যপণ্যের অনটন প্রভৃতির কথা বলতে পারি। বিজ্ঞানের প্রতি অতিরিক নির্ভরশীলতা আমাদের স্বাভাবিক শক্তিকে পঙ্গু করে দিয়েছে। তাই লিফট অচল হলে আমরা সিঁড়ি ভাঙার শক্তি হারিয়ে গোমড়া মুখে বিজ্ঞানের নিন্দা করি। এভাবে পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রনৈতিক জীবনে আজ নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান উপসংহার

বিজ্ঞান শহরজীবনে অপরিহার্য কিন্তু পল্লিজীবনে আজও সে কৃপণ ধনীর মতো আচরণ করছে। বিজ্ঞান মানুষকে সর্বস্ব দিতে চায়, কিন্তু মানুষ নিজের কবর নিজেই খুঁড়ে চলেছে। বিজ্ঞানের অপব্যবহারে মানুষ বিপর্যস্ত। মানুষের মনে শুভবুদ্ধির উদয় হলে দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের ব্যবহার ও ভাবনা সার্থকতা লাভ করবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

প্রো-বিডি নিউজ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয় ।

comment url